আরাম-চশমা -২
(কল্পবিজ্ঞান)
আগের পর্ব: https://nayeem.science/2019/07/17/%e0%a6%86%e0%a6%b0%e0%a6%be%e0%a6%ae-%e0%a6%9a%e0%a6%b6%e0%a6%ae%e0%a6%be/
১।
– কি হলো? এত হাসছ কেন?
– না, মানে পত্রিকাগুলোতে কতো মজার মজার খবর দেয়। পড়ে হাসি থামাতে পারছি না। তুমিও দেখো একটু।
– রাখো তোমার পেপার। মেয়েটার খোঁজ খবর রাখো কিছু? আর, তুমি শিওর ডাক্তার তোমাকে কালো চশমা পরে ঘুরতে বলেছে? অন্য কোন ডাক্তার দেখাবা?
– আরে বললাম তো, এই ডাক্তার আমার অনেকদিনের পরিচিত, কোনদিন ভুল চিকিৎসা করে নি। এখন যাও তো, বিরক্ত কোর না।
– রুমকির ব্যাপারটা জানার প্রয়োজনও বোধ করলা না?
– কি হয়েছে ওর?
– প্রতিদিন কলেজে যাওয়ার সময় পাড়ার ২টা ছেলে বিরক্ত করে। ওইদিন নাকি গোলাপ ফুল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলো।
– ও আচ্ছা। ব্যাপার না।
রাবেয়া অদ্ভুত দৃষ্টিতে স্বামীর দিকে তাকালেন। রাগে গা কাঁপছে তাঁর।
শমশের সাহেব ভ্রুক্ষেপ না করে পেপারে মন দিলেন। তাঁর মুখে ফুটে উঠল কোমল একটা হাসি।

২।
শমশের সাহেব ধীরে সুস্থে নাস্তা করে বাসা থেকে বের হলেন। অফিস আছে, সময়মত গেলেও হয়, না গেলেও হয়। সরকারি চাকরিতে আরাম আর আরাম।
রাহেলা এখনও কেমন জানি ঘোরের মধ্যে আছেন। পঁচিশ বছর ঘর করার পর হঠাত করে মনে হচ্ছে এই মানুষটাকে তিনি চিনেন না।
সোফার উপর অগোছালোভাবে পরে আছে পেপারটা। প্রথম পাতায় তিনটা খুনের খবর, একটা ধর্ষণ।
রাবেয়ার গা শিউরে উঠলো পড়ে।
৩।
শমশের সাহেব আগে আগে অফিস থেকে বের হয়েছেন। আরাম চশমার দাম নাকি আরও কমেছে। উপর মহল থেকে বিশাল একটা ফান্ড এসেছে এই চশমার জন্য, শমশের সাহেব বাসার সবার জন্য একটা করে নিলেন।
রাস্তায় সার্কাস টাইপের কিছু একটা হচ্ছে। লোকজন গোল হয়ে দাঁড়িয়ে মজা দেখছে। শমশের সাহেব এগিয়ে গেলেন।
দূর থেকে ভালো মতো দেখা যায় না। মনে হচ্ছে মেয়ে ঘটিত ব্যাপার। দূরে একটা মেয়ের উপর দুইটা ছেলে ঝাঁপিয়ে পরেছে। মেয়েটা আহত পশুর মতো চিৎকার করছে।
আশেপাশে অনেক মানুষ। অনেকের চোখেই কালো চশমা। তারা দাঁড়িয়ে মজা দেখছে।
শমশের সাহেবও দাঁড়িয়ে গেলেন। বেশ ভালো লাগলো তাঁর। অসাধারণ দৃশ্য।
৪।
শমশের সাহেব বাসায় আসলেন রাত দশটা নাগাদ।
রুমকি বাসায় ফিরে নি। রাবেয়া কাঁদতে কাঁদতে ফিট হয়ে গিয়েছিল। শমশের সাহেব বাসায় যেয়েই তাঁর চোখে কালো চশমা পরিয়ে দিয়েছেন।
এখন সব শান্ত। দুজনে মিলে রগরগে একটা তামিল মুভি দেখছেন।
লাইফ ইজ বিউটিফুল!
(শেষ)
শিমুল
😞😞😞 খুব খারাপ লাগলো