টিনি মিনিদের জেনারেল রিলেটিভিটি ৩
ইন্ট্রিন্সিক বক্রতা
#TMGR
১।
হাতে একটা কাগজ নেন।
কাগজে একটা রেখা আঁকেন।
এইবার কাগজটা বাঁকান।
গোল করেন, কোঁকড়া করেন যা খুশি করেন।
রেখাটা কি লম্বা হয়েছে???
না ভাই, রেখা এভাবে লম্বা হবে না।
লম্বা করতে হলে কাগজকে টেনে লম্বা করতে হবে।
কাগজ টানাটানি ঝামেলার জিনিস। ছিঁড়ে যাবে।
যদি কাগজের বদলে একটা রাবার শিট নেই সেটাকে টেনে লম্বা করলে রেখাটা লম্বা হবে।
কাগজ হাতে নিয়ে বাঁকালে যে জিনিসটা হয় সেটা হলো বাইরে থেকে বাঁকানো। এক্সট্রিন্সিক বক্রতা।
রেখা যেহেতু লম্বা হয় নি, তাই একটা পিঁপড়ার ওই রেখা বরাবর হেঁটে যেতে একই সময় লাগবে।
আমি যদি 2D ল্যান্ডের পুরাটা কোঁকড়া করে বাঁকিয়ে আমার 3D পকেটে ভরি, তার পরও 2D ল্যান্ডের প্রতিটা রাস্তা একই সমান বড় থাকবে।
বিসিএস পড়ুয়া টুডিন্সটানিনের বুঝার হয়তো উপায় থাকবে না বাইরে থেকে তাদের স্পেসটা বেঁকেছে।
এক্ষেত্রে কাগজটা ভেতর থেকে বাঁকা নয়, বাইরে থেকে বাঁকানো। এটা এক্সট্রিন্সিক বক্রতা।
কিন্তু, আমি যখন রাবারের শিটটা টেনে লম্বা করবো, অথবা, সেটার এক জায়গায় একটা ভারি লোহার বল ফেলব, তখন রেখা আসলেই লম্বা হবে।
এইটার নাম ইন্ট্রিন্সিক বক্রতা।
ঠিক যেন রাস্তার মাঝখানে পাহাড় বা গর্ত।
এই পাহাড়ের উপর দিয়ে হাঁটতে গেলে বেশি সময় লাগছে, এটা বুঝার জন্যও টুডিন্সটাইন হতে হয় না, বক্কর ভাইয়ের ড্রাইভারও বুঝে।
এই বক্রতার নাম ইন্ট্রিন্সিক বক্রতা।
২।
একটা জিনিস বাইরে থেকে বাঁকানো হলে সেটা সোজা টেবিলে ফেলা যায়। কিন্তু রাবার শিটের মতো মাঝখাটা বাঁকানো হলে সেটা কোনভাবেই সম্ভব না।
পৃথিবী আসলেই গোল। কাগজে আঁকা সবগুলো পৃথিবীর ম্যাপ ভুল।
বেশিরভাগই আন্টার্ক্টিকা লম্বা করে ফেলে।
প্রশান্ত মহাসাগর করে লাগে।
ফ্ল্যাট কাগজে পৃথিবীর ম্যাপ আঁকা ভুল।
যে জিনিস আসলেই বাঁকা, ভেতর থেকে বাঁকানো, সেখানে ইউক্লিডিয়ান জ্যামিতি কাজ করবে না।
পৃথিবীতে যদি বিশাল একটা ত্রিভুজ আঁকি, যার একটা বিন্দু মেরুতে, আর দুইটা বিষুবরেখা বরাবর, ওই ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি ১৮০ ডিগ্রি না।
আরও অনেক বেশি।
ভর জায়গায় জায়গায় স্পেস কে বাঁকায়, টাইমকেও বাঁকায়। সেখানে ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি ১৮০ ডিগ্রি হবে না।
ইউক্লিডিয়ান জ্যামিতি কাজ করা বন্ধ করে দিবে।
আমাদের শিখতে হবে রিম্যানের জ্যামিতি।
আশরাফুল ইসলাম
রিম্যানের জ্যামিতির বইয়ের নাম কি?