শনি
কল্পবিজ্ঞান
১।
শনি গ্রহটাকে সরাতে হবে স্যার। আর কোন উপায় নাই।
গ্যালাক্টিক কাউন্সিলের সভাপতি রুথ্রাস্ট ভীষণ চিন্তায় পড়েছেন। কি করবেন বুঝতে পারছেন না।
কাউন্সিলের সভাপতি হিসাবে পুরো গ্যালক্সির দেখভাল করার দায়িত্ব তাঁর। নির্বাচিত হওয়ার পরপরই সবগুলো বাসযোগ্য গ্রহে স্কাউট পাঠিয়েছেন। কোন গ্রহের কি কি সমস্যা বুঝে আসার জন্য।
বিশেষ করে গ্যালাক্সির ওরায়ন বাহুর ওই দিকে বেশ কিছু দরিদ্র শ্রেণির গ্রহ আছে, তাদের অনেক সমস্যা। এই যেমন পৃথিবী। ওইখানে সাতশো কোটি মানুষ হয়ে গেছে, মানুষগুলো সারাদিন মারামারি কামড়াকামড়ি করছে, তাপমাত্রা নাকি হুহু করে বাড়ছে, পরিবেশের নাকি বারোটা বেজে যাচ্ছে আরও হাজার হাজার সমস্যা।
এখন স্কাউট তাকে এসে বলছে, আসলে কোন সমস্যা নাই, সব সমস্যার মুল কারণ ওই শনি!!!
তোমরা ভালো করে খোঁজ নিয়েছ তো?
হ্যাঁ স্যার, আপনিই তো বললেন, ওই গ্রহের নেতাদের বলে রাজা, সম্রাট, প্রধানমন্ত্রী, রানী ইত্যাদি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর অ্যাপোয়েন্টমেন্ট পাই নি, তিনি খুব ব্যাস্ত ছিলেন, কিন্তু দুইজন মহারাজা আর একজন মহারানীর সাথে ঠিকই দেখা করেছি।
(স্কাউট রিবিট তার কাজে খুব খুশি। সে হাসছে। সভাপতির কপালে চিন্তার রেখা বাড়ছে। )
তারপর?
মহারাজ প্রফুল্লচন্দ্র রায় বিশেষ জ্ঞানী গুনি মানুষ। তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নাসা থেকে ৭৯ তম মৌলের তৈরি একটা মেডেল নিয়ে এসেছেন। তিনি আমাকে খুব ভালো করে বুঝিয়েছেন, কিভাবে মানুষের রোগ শোক জরা মৃত্যু থেকে শুরু করে যানজট, পরিবেশ দূষণ সব ওই শনির প্রভাবে হয়। বিশ্বাস করবেন না স্যার, আমি পৃথিবীর মানুষকে বোকা শোকা ভেবেছিলাম, ওরা যে জ্ঞান বিজ্ঞানে এতো এগিয়ে গেছে জানতাম না! সুলতান বাহাদুর আহমেদ শাহ কুতুবপুরি আমাকে কয়েকটা টাইম স্টোন দিয়েছে ১০০০০ ডলারের বিনিময়ে, এগুলো দিয়ে নাকি শনি গ্রহের প্রভাব একটু হলেও কাটানো যায়। আর রানী শকুন্তলা দেবী দিয়েছে আটটা ধাতুর তৈরি এই অদ্ভুত ডিভাইসটা।
(এগুলো আসলেই চিন্তার বিষয়। পৃথিবীর মানুষজন মনে হচ্ছে আসলেই অনেক এগিয়ে গেছে। তিন মাস ধরে গবেষণা করেও এখানকার বিজ্ঞানীরা ওই অদ্ভুত পাথর আর মালাগুলোর রহস্য ভেদ করতে পারে নি। )
রুথ্রাস্ট হার মানলেন। তাহলে কি, শনি গ্রহটাকে সরানো ছাড়া আর কোন উপায় নাই?
না স্যার। ওই গ্রহটাকে সরাতে হবে। তাহলে এমনিতেই পৃথিবীর সব ঠিক হয়ে যাবে।
২।
সাড়া পৃথিবীতে আতঙ্ক চলছে।
কে জানি শনির কক্ষপথে ছোট একটা ব্ল্যাক হোল ছেড়ে দিয়েছে। শনি গ্রহটা লণ্ডভণ্ড হয়ে ছিরে ছুরে ব্ল্যাক হোলে ঢুকছে। ভয়ঙ্কর ব্ল্যাক হোল আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে। গামা রে রেডিয়েশানে আকাশ ভেসে গেছে। আর কিছুদিন পর বৃহস্পতিও টিকবে না বলে নাসা ঘোষণা দিয়েছে।

পৃথিবীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। নাসা কিচ্ছু করতে পারবে না বলে দিয়েছে।
এই মুহূর্তে পৃথিবীবাসির শেষ ভরসা মহারাজ রাজীব শাস্ত্রী। তিনি নাকি কৃষ্ণগহ্বরের কুনজর থেকে পৃথিবীবাসিকে রক্ষা করতে পারেন। রকেট পাঠিয়ে গ্রহ নক্ষত্রের কক্ষপথ পরিবর্তন করতে পারেন।
সমস্যা হলো অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁর ফোন বন্ধ। কোথায় ছুটি কাটাচ্ছেন কেউ বলতে পারছে না।

শিমুল
বিষ হবে বিষ??? একটু খেয়ে মরে যাই