টার্ডিগ্রেড
পৃথিবীর সবচেয়ে রাফ অ্যান্ড টাফ প্রাণীর নাম টার্ডিগ্রেড। সাইজ: ১ মিলিমিটারের কম। রিয়েল লাইফ সুপারহিরোদের বস সে। হিমালয়ের চূড়া থেকে শুরু করে গভীর সমুদ্রের তলা, নিরক্ষরেখা থেকে শুরু করে আন্টার্ক্টিকার বরফের নিচ, রেইন ফরেস্ট থেকে মরুভূমি, সব জায়গায় তার অবাধ বিচরণ। তার জন্য আলাদা একটা পর্ব খোলা হয়েছে, নাম টার্ডিগ্রেডা।
চলুন দেখে আসি এদের সুপার পাওয়ার সম্পর্কে।
১। -২৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় জমানোর পর বেঁচে ফিরে আসার রেকর্ড আছে টার্ডিগ্রেডদের। পরম শূন্যের মাত্র ১ ডিগ্রি উপরে।
২। ১৫০ ডিগ্রিতে ফুটালে সব পানি বাষ্প হয়ে যায়, টার্ডিগ্রেড টিকে থাকে কয়েক মিনিট।
৩। সবচেয়ে গভীর সমুদ্রে যে মারাত্মক চাপ, তারও ৬ গুন চাপ টার্ডিগ্রেড সহ্য করতে পারে। টিপে মারার চিন্তা বাদ।
৪। চাপ একেবারে না থাকলেও এরা মরে না। ভাকিউয়ামে নিলেও ইমপ্লোড করবে না।
৫। যে পরিমাণ রেডিয়েশানে মানুষ মারা যায়, তার কয়েকশো গুন রেডিয়েশান টার্ডিগ্রেড সহ্য করতে পারে। স্পেসে নিয়ে ছেড়ে দিলে মরবে না।
৬। পানি খাবার ছাড়া রাখবেন? ৩০ বছর টিকতে পারবে, লাভ নাই।
৭। পুরাপুরি শরীর থেকে পানি বের করে ফেলবেন? আবার পানি পেলে লাফানো শুরু করবে।
৮। বিষ দিয়ে মারবেন? তাও লাভ নাই, বেশিরভাগ কেমিক্যাল এর কোন ক্ষতি করতে পারে না।
টার্ডিগ্রেডকে শুকায়, পানি বের করে, স্পেসে নিয়ে যেয়ে ছেড়ে দিয়ে আসা হয়েছিল। ১০ দিন ধরে তারা ভাকিউয়াম আর স্পেসের তীব্র আল্ট্রাভায়ওলেট রেডিয়েশান সহ্য করেছে। তারপরও পৃথিবীতে এনে পানি দেওয়ার পর বেশিরভাগ টার্ডিগ্রেড আবার বেঁচে ফিরেছে।
তো এতো হার্ডি টার্ডিগ্রেড, এরা কি অমর? টার্ডিগ্রেডকে মারার সবচেয়ে সহজ উপায় কি?
গভীর সমুদ্রে নামে একটা সিরিজ লিখছি, সেখানে অমর পরানিদের কথা থাকবে । থাকবে আরও আশ্চর্য সব দানবদের কথা। টার্ডিগ্রেড অমর না।
টার্ডিগ্রেডকে খাওয়ায় দাওয়ায় মানুষ করার চেষ্টা করলে এরা কয়েক মাসের মধ্যে মারা যাবে।